
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক , আসানসোল : টানা ৯২ দিন জেলে থাকার পর শারীরিক ওজন কমলেও অভিযোগের ওজন বেড়েই চলেছে “কেষ্ট”র বিরূদ্ধে । নানান অভিযোগের ডালি সাজিয়ে হাজির হচ্ছে সিবি আই , আর একের পর এক জামিন খারিজ হছে বীরভূমের “বাঘ”(ববি উবাচ) অনুব্রত মন্ডলের। যেমনটা দেখা গেল শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবি আই আদালতে । এদিন অনুব্রতকে জেল হেফাজতের মেয়াদের শেষে পেশ করা হয় আসানসোল আদালতে। দুপুর সাড়ে ১২টার পরে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এজলাশে শুরু হয় সওয়াল জবাব। অনুব্রতর আইনজীবি সঞ্জয় দাসগুপ্ত জামিনের আবেদন জানাতে গিয়ে ইডি ও সিবি আইয়ের একসাথে তদন্তের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে চার্জশিট প্রশ করার পরেও কেন অনুব্রতকে জেলে আটকে রাখা হবে , তাঁর দাবি দীর্ঘ তদন্তে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছুই পেশ করতে পারেনি। সিবি আইয়ের দেওয়া প্রভাবশালী তত্বকে খারিজ করে তিনি বলেন যে চার্জশীটে প্রায় ৪০০ জন সাক্ষীর উল্লেখ আছে , অনুব্রত যদি সাক্ষীদের ওপর প্রভাব খাটাতেন , তাহলে একজনও অন্তত সেকথা বলতেন । যদিও সওয়াল জবাব শেষে বিচারক ফের অনুব্রত মন্ডলকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতেই পাঠান। আগামী ২৫ শে নভেম্বর ফের শুনানী হবে।

তবে এদিন ইডির পক্ষ থেকে অনুব্রত মন্ডলকে জেলে গিয়ে জেরা করার আবেদন জানানো হয় । ইডির আইনজীবি অভিজিত ভদ্র আদালতে অনুব্রত মন্ডলকে জেরা করার আবেদন জানান। তিনি বলেন ইতিমধ্যেই সায়গল হোসেন, সুকন্যা মন্ডল ও সিএ মনীষ কোঠারিকে ইডি জেরা করেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অনুব্রতকে জেরা করা প্রয়োজন বলে বিশেষ সিবি আই আদালতে আবেদন জানান ইডির আইনজীবি। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। রায়ে বলা হয়েছে যে কোন দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে কোনদিন আসানসোল সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করতে পারবে এবং জেরা করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ সহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যেতে পারবে ইডির আধিকারিকগন।

অন্যদিকে এদিন অনুব্রতকে সংশোধনাগার থেকে বের করে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় লটারি প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তিনি যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হন। দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করা হলে তিনি ড্রাইভারকে গাড়ীর কাঁচ তুলে দিতে বলেন। উল্লেখ্য , তিনি ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা মন্ডলের একাধিকবার লটারি প্রাপ্তিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধীরা কালো টাকা সাদা করার প্রসঙ্গ নিয়ে ক্রমাগত খোঁচা দিয়ে যাচ্ছে ।
গত ১০ই আগষ্ট গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে। তারও আগে গ্রেপ্তার হয় অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। তিনি আসানসোল সংশোধনাগারে থাকলেও সম্প্রতি তাকে ইডি দিল্লী নিয়ে গেছে । এদিন তারও শুনানির দিন ছিল , তিহার জেল থেকে ভারচুয়ালি শুনানীতে উপস্থিত ছিল সায়গলও। যদিও এদিন রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি।