
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক,দুর্গাপুর : গ্রামের ঠিকানা দুর্গাপুর নগর নিগমের ২৫ নং ওয়ার্ড। নগরনিগমের অন্তর্ভুক্ত হলেও মোজরাকোন্দা আদিবাসী পাড়া যেন পৃথিবীর শেষপ্রান্তে। এখানে পানীয় জলের সমস্যা,নিকাশী ব্যবস্থার সমস্যা,শৌচালয়ের সমস্যা ,স্কুলের সমস্যা , মানুষের রোজগারের সমস্যা ,সমস্যা এখানে মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী ।
দীর্ঘদিন ধরেই নানান সমস্যার অভিযোগ আসছিল দুর্গাপুর নগরনিগমে। অবশেষে এদিন মোজরাকোন্দা পরিদর্শনে গেলেন নগর নিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখার্জী, সঙ্গে ছিলেন এই ওয়ার্ডের বিদায়ী পুরপিতা দীপঙ্কর লাহা ও নগরনিগমের ইঞ্জিনীয়ার সহ একাধিক আধিকারিক। প্রশাসককে কাছে পেয়ে নানান সমস্যার কথা জানান বাসিন্দারা। আশেপাশের এলাকার উন্নয়ন হলেও এখানে যে স্তব্ধ, তা প্রশাসককে জানান বাসিন্দারা। এখানে একটি স্কুলের পলেস্তারা খসে পড়ছে , অবিলম্বে সেই স্কুল মেরামতের দাবি জানান স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী অপনা হাঁসদা বলেন , প্রশাসক সব শুনেছেন এবং বলে গেলেন অবস্থার উন্নতি হবে , দেখা যাক কবে হয় ।
প্রশাসক অনিন্দিতা মুখার্জী বলেন, খুব শীঘ্রই স্কুলটির সংষ্কারের কাজ শুরু হবে। এছাড়াও অন্যান্য কিছু সমস্যা রয়েছে , সেগুলিও দ্রুত সমাধান করা হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হরিবাজার পর্যন্ত ২৫ নং ওয়ার্ডের সীমানার পর জেমুয়া পঞ্চায়েত এলাকা শুরু হয়ে যাচ্ছে। সেই পঞ্চায়েত এলাকা শেষ হওয়ার পর ফের ২৫ নং ওয়ার্ডের মোজরাকোন্দা আদিবাসী পাড়া। অর্থাৎ মুলস্রোত থেকে ভৌগলিক ভাবে বিচ্ছিন্ন এই অঞ্চল। এখানে রাস্তা তৈরীর ক্ষেত্রেও সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে নগরনিগম , পাশের গ্রাম থেকে বাধার কারনে করা যায়নি রাস্তা , জানান প্রশাসক মন্ডলীর প্রধান। তবে সমস্যার জট কাটবে বলে আশ্বাস প্রাক্তন মেয়রের এবং সেই আশ্বাসে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হয়েছেন এলাকাবাসীরা।
যদিও দুর্গাপুর নিগর নিগম ও তৃণমূলের তীব্র সমালোচনা করেছেন বাম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার। তিনি দাবি করেন , এই অঞ্চলে যা উন্নয়ন হয়েছে ,সবই বাম আমলে। গত ১১ বছর এখানে কোন কাজই হয়নি ,কটাক্ষ তাঁর। এই এলাকার মানুষকে ভোট দিতে ২ কিমি দুরে হরিবাজারে যেতে হয়। সর্বদলীয় বৈঠকে ওই বুথ মোজরাকোন্দায় স্থানান্তরিত করার জন্য সব দল সহমত পোষন করলেও শুধু তৃণমূলের আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি বলে জানান পঙ্কজ বাবু। এদিনের পরিদর্শন হলেও কাজ যে কিছু হবেনা,তা একপ্রকার নিশ্চিত বলে জানান এই বামনেতা। তবে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে এখানকার মানুষের ক্ষোভ তৃণমূল টের পাবে বলেই দাবি সিপিএম জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যের।
আদিবাসী পাড়ায় প্রায় ৩০টি পরিবারের বসবাস। আশেপাশের জমিতে স্বল্প চাষাবাদ , দুর্গাপুরে দিনমজুরী করে এখানের বাসিন্দাদের পেটের ভাত জোগাড় হয়। স্বাস্থ্যপরিষেবাও সঠিক ভাবে পৌঁছায় না । তাই এই অঞ্চলের উন্নয়ন আক্ষরিক অর্থেই প্রয়োজন । এ ক্ষেত্রে “দের আয়ে,পর দুরুস্ত আয়ে” কথাটি যদি দুর্গাপুর নগর নিগম প্রমানিত করে , তাহলে মোজরাকোন্দার হতদরিদ্র মানুষ জনের জীবন যুদ্ধের লড়াই অন্তত কিছুটা সহজ হয়।