
সৈয়দ মফিজুল হোদা , বাঁকুড়া : হাতির হামলায় প্রাণ গেল দুই ব্যক্তির। সারাবছরই কোন না কোন সময় বুনো হাতির তাণ্ডবে ফসল নষ্ট থেকে শুরু করে মানুষের জীবন হানির ঘটনা ঘটেই থাকে।ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে বুনো হাতির তাণ্ডবে অনেক মানুষের প্রাণ বেঘরেই চলেছে। ঠিক বছরের শুরুতেই একই ঘটনার কবলে পড়ল বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় থানার অন্তর্গত সংগ্রামপুর গ্রাম। প্রসঙ্গত, সংগ্রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মাত্র৪৩ বছর বয়সীর মঙ্গল বাউরি, পেশায় রাজমিস্ত্রি।
রোজকারের মতো কাজ থেকে বাড়ি ফিরে অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ আনার জন্য প্রেসক্রিপশন হাতে করে নিয়ে বেরিয়েছিল নিকটস্থ বাঁধকানা মোড়ে। ওষুধ আনতে গিয়ে বাড়িতে ফেরা আর হলো না। অতঃপর, প্রেসক্রিপশন দেখে চিহ্নিত করা হয় ওই ব্যক্তি সংগ্রামপুর গ্রামের বাসিন্দা। আর বিলম্ব না করে প্রশাসনের তরফ থেকে পরিবারে খবর দেওয়া হয় এই বলে বুনো হাতির হামলায় মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলের।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো সংগ্রামপুর গ্রাম জুড়ে। এই প্রসঙ্গে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে চার কন্যা আছে তার। গ্রামের ছা-পোষা গরিব মানুষ হওয়ায় কোনক্রমে দুই মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন হলেও বাড়িতে এখনো রয়েছে ছোটো ছোটো দুই মেয়ে ও স্ত্রী।
অপরদিকে বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া থানার অন্তর্গত ঝরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ৭২ বছরের বয়সী তুলসি বটব্যাল তাঁরও মৃত্যুর খবর আসছে হাতির হানাতেই। মধ্যরাতে ঘুমোনোর সময় দেওয়াল ভেঙ্গে তার বাড়িতে ঢুকে পড়ে একটি দাঁতাল সেখানেই দাতালে আক্রমণে প্রাণহারান তুলসী দেবী। পুলিশ ওই ব্যক্তির মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। তবে পরিবারের লোক বনদপ্তরের উপর রীতিমতোন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাদের দাবি, বনদপ্তর থেকে একবারও খবর নেওয়া হয়নি এই ঘটনার। এইভাবে বুনো হাতির তাণ্ডবে বেঘোরে একাধিক ব্যক্তির প্রান চলে যাওয়াতে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো এলাকাব্যপী।
এখন শুধু দেখার বিষয় এটাই এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনাকে এড়ানোর জন্য কি ব্যবস্থা নেয় বনদপ্তর। যদিও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে বনদপ্তর। বনদপ্তরের আধিকারিকগণ জানান ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।