
৯৯ বাংলা নিউজ ডেস্ক: বিক্ষোভের পর মেয়েদের শুধুমাত্র প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্তই পড়াশোনা করার কথা ঘোষণা করল তালিবান সরকার। ইতিমধ্যেই একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তালিবানের শিক্ষামন্ত্রকের তরফে। সেখানে মেয়েদের প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে একথাও উল্লেখ করা রয়েছে যে, স্কুলের পোশাক পাশ্চাত্য কায়দায় হওয়া চলবে না। ইসলামিক রীতি মেনে পোশাক পরেই স্কুলে যেতে হবে।এমনই জানিয়েছে তালিবান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রক।
সম্প্রতি একটি চিঠিতে তালিবান শিক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশ, আফগানিস্তানের সমস্ত সরকারি, বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার অনুমতি দেওয়া হল মেয়েদের। ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিলেও তাদের ইসলামিক আইন অনুসারে পোশাকবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে তালিবান সরকার।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ কয়েক আগেই আফগান মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করেছে তালিবান। যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে তারা। যদিও ২০২১ সালের অগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং নারীর অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালিবান। তবে বাস্তবে উল্টোটাই ঘটেছে বলে আন্তর্জাতিক মহলের দাবি।
মিডল এবং হাই স্কুলের পর আফগান মেয়েদের জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজাও বন্ধ করেছে তালিবান সরকার। ইসলামের ‘দোহাই’ দিয়ে মেয়েদের আপাদমস্তক ঢাকা পোশাক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনও পুরুষ আত্মীয় ছাড়া জনসমক্ষে বেরোনো নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছে তারা। এই সব ফতোয়ার কারণে মানবাধিকার সংগঠনগুলির তোপের মুখে পড়েছে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, ব্রিটেন এবং জাপানের মতো জি-৭ গোষ্ঠীর দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা এই ফতোয়া প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানালেও তাতে কাজের কাজ হয়নি। অন্য দিকে, মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় কোপ মারায় তালিবানের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে তুরস্ক, কাতার এবং পাকিস্তানের মতো মুসলিম দেশগুলিও।
নতুন বছর পড়তেই তালিবান সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, দেশে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হবে। এই ঘোষণার পরেই বিক্ষোভের প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তানে। বিশ্বের দরবারেও মুখ পুড়েছিল আফগানিস্তানের। এমনকি মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলিও তালিবান সরকারের এই ফতোয়ার কড়া নিন্দা করে। সেই চাপে পড়েই শেষমেশ প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার অনুমতি দেওয়া হল বলেই মনে করছেন অনেকে।