
৯৯ বাংলা নিউজ, মালদহ: পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে ফের বাড়ছে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম। প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে অবৈধ ভাবে চলছে মাটি কাটার কাজ।চাষের জমির পাশে দেদার ভাবে মাটি কাটার ফলে কৃষিকাজের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা চাষীদের। এই ভাবে মাটি কাটা চলতে থাকলে এক সময় চাষের জমি শেষ হয়ে যাবে। তখন মানুষ খাবে কী? প্রশ্ন চাষীদের। সেই মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটা গুলোতে। মাটি থেকে ইট তৈরি হয়ে নদীপথে পাচার হয়ে যাচ্ছে বিহারে। বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। এর আগে বিহারে মাটি পাচারের অভিযোগ উঠেছিল এবার পাচার হয়ে যাচ্ছে ইট। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন?। একদিকে তৃণমূল নেতারা বলছে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা যাবে না। অন্যদিকে তাদের মদতেই চলছে মাটি কাটার কাজ। শাসকদলের দ্বিচারিতা নিয়ে তীব্র খোঁচা বিজেপির। পাল্টা সাফাই তৃণমূলের। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত ভালুকা বাজার ঢালাই মোড়ের পাশে কয়েকদিন ধরে দেদারে চলছে মাটি কাটার কাজ। ৩ ফিটের জায়গায় কাটা হচ্ছে ৮- ৯ ফিট করে মাটি। পাশেই হচ্ছে ভুট্টা চাষ।এই ভাবে অবাধে মাটি কাটা হলে কৃষি কাজের ক্ষতি হতে পারে আশঙ্কা চাষীদের। প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে কি ভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে মাটি কাটা হচ্ছে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।স্থানীয় সূত্রের খবর অবৈধভাবে মাটি কেটে সেই মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটা গুলোতে। সেই মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইট।যে ইট গোবরা ঘাট দিয়ে নদী পথে ট্রলির পড় ট্রলি চলে যাচ্ছে বিহারে। বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। এই ভাবেই মাটি মাফিয়া এবং ইটভাটার মালিকরা মুনাফার লোভে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। অবৈধ ভাবে মাটি কাটার বিরুদ্ধে এর আগে সরব হয়েছিলেন খোদ শাসকদলের বিধায়ক এবং রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছিল অবৈধ ভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে। বিডিও, ভূমি সংস্কারক আধিকারিক এবং আইসিকে নিয়ে গঠন হয়েছিলল কমিটি। তারপরেও কি ভাবে মাটি কাটা চলছে? প্রশ্ন বিরোধীদের। তৃণমূল নেতাদের মদত ছাড়া এই কাজ হতে পারে না এমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে পাল্টা সাফাই তৃণমূলের।
কৃষক শেখ মাইনুল বলেন, কারা এভাবে মাটি কাটছে সেটা বলতে পারবো না। কিন্তু যে ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে আমাদের জমির ক্ষতি হতে পারে। কয়েক দিন ধরেই চলছে মাটি কাটার কাজ।
উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, যেখানে প্রশাসনিক ভাবে কমিটি গঠন হলো মাটি কাটা রুখতে। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সরব হলেন। তারপরেও আবার কি ভাবে মাটি কাটার কাজ শুরু হল। তৃণমূলের মদত ছাড়া এটা সম্ভব না।
মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী বৈধ ভাবে মাটি কাটতে হবে। কেউ জোর করে কারো জমি থেকে মাটি কাটতে পারবে না। যদি অবৈধ ভাবে কিছু হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুরজিৎ দাস বলেন আমরা শুনেছি, সব কিছু খতিয়ে দেখে আইন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত শুধু হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা নয় সমগ্র মালদা জেলা জুড়ে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা নিয়ে সরগরম হয়েছিল রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখার্জি সরব হয়েছিলেন জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। করা বার্তা দিয়েছিলেন সেই প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। প্রশাসনিক ভাবেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও ফের অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অভিযোগ সামনে আসলো। প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।