
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক, দুর্গাপুর : ক্রমেই যেন মৃত্যুপুরী হয়ে উঠছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা। একের পর এক দুর্ঘটনায় কারখানা কতৃপক্ষের উদাসীনতা ও যন্ত্রাংশের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
রবিবার, ২০শে নভেম্বর। কাজ চলাকালীন ফের দুর্ঘটনা ঘটে যায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায়। তাতে সেদিনই মৃত্যু হয় পল্টু বাউড়ি নামে এক শ্রমিকের। গুরুতর জখম অবস্থায় আরও তিন শ্রমিক ভর্তি হাসপাতালে।

তারমধ্যে, মঙ্গলবার ভোররাতে গোপী রাম (৩৫) নামে আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত গোপ নামে বাকি দুই শ্রমিকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

জানা গিয়েছে, ওইদিন সকাল ১০:৪৫ নাগাদ কারখানার (Permanent Way Engineering বিভাগে) ২নং ব্লাস্ট ফার্নেসে স্ল্যাগ ভর্তি হট ল্যাডেল এর লক পিন খুলে স্ল্যাগ ছিটকে যায়। সেই সময় ওই রাস্তার উপরেই রেললাইন রিপেয়ার করছিলেন বেশ কয়েকজন ঠিকা শ্রমিক। দুর্ঘটনার জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১ ঠিকা শ্রমিকের।
ঘটনার পর স্ল্যাগ ব্যাঙ্ক ও ট্রাফিক বিভাগের দুই জেনারেল ম্যানেজার
গৌতম বিষয়ী ও
কমল গায়েনকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করেছে সেইল কর্তৃপক্ষ। কেন এমনটা ঘটলো? তা জানতে কমিটি গঠন করে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।
কিন্তু যারা শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি জানে, বোঝে এবং ভাবে; সেই শ্রমিক সংগঠনের তরফে কোনো প্রতিনিধি কে কেন তদন্ত কমিটিতে রাখা হল না? এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডিএসপি-র সিটু নেতা সৌরভ দত্ত। যা নিয়ে সিআইটিউ’র জেনারেল সেক্রেটারি তপন সেন সেইলের চেয়ারম্যানকে একটি চিঠিও দিয়েছেন।

তবে বলাই বাহুল্য, ইস্পাত কারখানায় এ ধরনের দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। মাঝেমধ্যেই ফার্নেসে বিস্ফোরণ ঘটে। বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি, অগ্নিকাণ্ড ঘটে। একদিকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা অন্যদিকে যন্ত্রাংশগুলির রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, নানান ইস্যুতে অভিযোগ ওঠে। শ্রমিক মৃত্যু নিয়ে শিল্পশহর জুড়ে তোলপাড় হয়। শ্রমিক সুরক্ষা নিয়ে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বারেবারে আন্দোলনে সামিল হয়েছে। কিন্তু, তারপরেও চিত্রটা বদলায়নি এতোটুকুও। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে ইস্পাত কারখানায় আর ক্রমেই মৃত্যু মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে..