
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক, কাঁকসা : রিমোটের মাধ্যমে কমছিল ধানের ওজন! কারসাজি ধরা পড়তেই ফড়েদের গাছে বেঁধে রাখল চাষিরা। আটক ২। ব্যাপক চাঞ্চল্য কাঁকসায়।
ফড়েদের উৎপাত অব্যাহত।
সোয়েটারের তলায় রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে ধানের ওজন কমানো। দালালচক্রের দাপটে অভিনব কায়দায় প্রতারণা হাতেনাতে ধরে ফেললো কৃষকরা। সোমবার সকালের ঘটনা। কাঁকসার গোপালপুরের বৃন্দাবনপুরে কৃষকদের থেকে ধান কিনতে এসেছিলেন ফড়েরা। কুইন্টাল প্রতি ১০৫০ টাকা দেওয়ার কথাও হয়েছিল উভয়পক্ষের মধ্যে। সেই মতো চাষিরা ফড়েদের ফাঁদে পা দিয়ে সরকারি মূল্যের থেকে অনেক কমেই ধান বিক্রি করতে রাজিও হয়ে যায়। কিন্তু তারপরই গোল বাঁধে। ওজনে গরমিল হচ্ছে দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে চাষিদের মনে। সেইসময়, চাষীরা লক্ষ করেন এক ফড়ের সোয়েটারের ভেতরে রয়েছে রিমোট। ওই রিমোটের মাধ্যমেই ওজন মেশিন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল বলে অভিযোগে সরব চাষিরা।
পুরো বিষয়টি বুঝতে পারার পর ফড়েদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তারা। দুই ফড়েকে হাতেনাতে ধরে ফেলে, গাছে বেঁধে রাখে উত্তেজিত কৃষকরা। শুরু হয় বিক্ষোভ। চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে ওই দুই ফড়েকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন ওই অভিযুক্ত ফড়ে।
উল্লেখ্য, ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে ফড়েদের দাপট নতুন ঘটনা নয়। আগেও একাধিকবার কৃষক ও মিল মালিকরা অভিযোগ করেছেন, ধান নিয়ে ফড়েরা অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে। ফলে ধান বিক্রিতে প্রবল সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাদের।
কিন্তু, সরকারের তরফে ন্যায্যমূল্যে ধান কেনার কথা থাকলেও, অনেক ক্ষেত্রেই তা হয় না। তাই বাধ্য হয়ে সেই ফড়েদের কাছেই কম দামে ধান বেচতে হয় চাষিদের। ফলে মার খায় লাভের অঙ্ক।
তাও, ফড়েদের কাছেই ধান বিক্রি করেন তাঁরা। অনেকে জানান, সরকারের তরফে সব রকমের ধান কেনাও হয় না। ফলে সেই সব ধান বিক্রি করতে এখনও ফড়েরাই ভরসা গাঁয়ে-গঞ্জের চাষিদের। হাতে দ্রুত টাকা চাই তাঁদের। অথচ, সেই ফসল ফলানো মানুষগুলো কে ঠকিয়েই ব্যবসা বাগাচ্ছে ফড়েরা। দুর্ভাগ্যবশত, এদিন হাতেনাতে ধরা পড়লো দুজন। আগেও, ফড়েদের কারসাজি ধরা পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটিতে বেধে মারধর ও করা হয়েছিল। কিন্তু, তাতে বিশেষ লাভ হচ্ছে কোথায়? এ বার কি অবস্থার বদল ঘটবে? নাকি সেই ফড়েদের দৌরাত্ম্যই চেনা ছবি হয়ে থেকে যাবে? প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনেরই ভূমিকা নিয়েও। হ্যাঁ, এগুলোই এখন লাখ, থুড়ি কোটি টাকার প্রশ্ন।