
৯৯ ডিজিটাল ডেস্ক,দুর্গাপুর : অভিযোগ ছিলই একাধিক দুষ্কর্মের। সেই অভিযোগেই মায়াবাজারের কুখ্যাত মাফিয়া সরবন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। গত কয়েকদিন ধরেই এলাকার অবৈধ কারবারের দখলদারি নিয়ে দুই মাফিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে চলছিল দড়ি টানাটানি। অবশেষে এলাকার ত্রাস ফের একবার পুলিশের জালে। ধৃত মাফিয়াকে এদিন দুর্গাপুর আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতের বিরূদ্ধে খুনের হুমকি,মারধোর, ভাঙচুর সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
দুদিন আগে ওয়াড়িয়া ও মায়াবাজারে পরিবহন ব্যবসায়ী মিথিলেশ সিং এর অফিস,গাড়ী,দোকানপাট ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে সরবন চৌধুরী ও তার দলবলের বিরূদ্ধে। নাম জড়ায় তৃণমূল যুব নেতা ইমরান খানের। সরবনের নানান অপরাধমূলক কার্য্যকলাপে পুলিশী নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয় মিথিলেশ সহ তার পরিবার। এই ঘটনায় আগেই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
অন্যদিকে এদিন সরবন চৌধুরীর গ্রেপ্তারীর প্রতিবাদে পরিবারের মহিলা সহ বেশ কয়েকজন মহিলা ডিটিপিএস ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। এদিন ধৃতের স্ত্রী পার্বতী চৌধুরীর অভিযোগ, পুলিশ মিথিলেশ সিং এর একতরফা অভিযোগ শুনে স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর স্বামী সম্পুর্ন নির্দোষ বলে দাবি করেন পার্বতী দেবী সহ পরিবারের অন্যান্য মহিলারা। সরবনের গ্রেপ্তারীতে এলাকায় ফের বেড়েছে উত্তেজনা।
কিন্তু কে এই সরবন চৌধুরী ? দুর্গাপুর ইস্পাতের ছাঁট লোহা সহ রাতুড়িয়া শিল্প তালুকের বন্ধ কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি, অবৈধ লোহা সাম্রাজ্যের কার্যত বেতাজ বাদশা বলাই চলে। তবে শুধু লোহা নয়, বালি,বোল্ডার,ছাই , সবেতেই অবাধ বিচরন এই ব্যাক্তির। কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছত্রছায়ায় থেকে দামোদরের মানায় অবৈধ পোস্ত চাষেও সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছে সরবন। আফিম,গাঁজা,অবৈধ অস্ত্র, সরবনের ব্যবসার তালিকায় কি নেই! এর আগেও একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে ,পরে ছাড়াও পেয়েছে। ২০১৩/১৪ সাল থেকে রাজনৈতিক ব্যাক্তির সান্নিধ্যে ও ছত্রছায়ায় বাড়বাড়ন্ত শুরু হয় সরবনের। ততদিন পর্যন্ত এই এলাকার আর এক অবৈধ ব্যবসার কিংপিন পদারথ রামের ক্রমেই প্রতিদ্বন্দী হয়ে ওঠে সরবন। তারপর থেকেই এই দুই মাফিয়া গোষ্ঠীর অবৈধ ব্যাবসা দখলের লড়াইয়ে বারেবারে অশান্ত হয়েছে এলাকা । দুপক্ষকে বশে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। দুদিন আগে পদারথ রামের শ্যালক মিথিলেশ সিংএর কার্যালয় ও গাড়ী ভাঙচুরও সেই দখলের লড়াই বলেই অভিমত স্থানীয়দের। আপাতশান্ত শিল্প শহরের এক অংশের এই “মাফিয়া রাজ” যে দগদগে ঘা,তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মায়াবাজার,ওয়াড়িয়া এলাকার অবৈধ ব্যবসার দখলদারির লড়াই শুধু পুলিশের মাথাব্যাথা বাড়ায়নি,কেড়েছে আমজনতার শান্তিও।