
অবশেষে লক্ষ্য সফল।
সংগৃহীত আবর্জনা থেকে জৈব সার তৈরি করে তা বাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত করে ফেলল দুর্গাপুর পুরসভা। বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্রের উদ্বোধন হল সাড়ম্বরে। দায়িত্বে দিল্লীর “ন্যাকফ”।
দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪৩টি ওয়ার্ডের নোংরা জমা হত দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়ার শঙ্করপুর এলাকায়। দীর্ঘ ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সেই আবর্জনা জমা হতে হতে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ১১ একর জমি দখল করে ফেলেছে। নোংরা আবর্জনার দুর্গন্ধে নাজেহাল পরিস্থিতি স্থানীয় মানুষ এর। একাধিকবার দুর্গাপুর নগর নিগমকে এই আবর্জনা সরানোর দাবিও জানিয়েছিল এলাকাবাসীরা। আর এবার সেই দাবি মেনেই পুর-এলাকা পুরোপুরি দূষণমুক্ত করার দিকে এক কদম এগোল দুর্গাপুর পুরসভা। এবিষয়ে দুর্গাপুর নগর নিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখার্জী বলেন, “দুর্গাপুর এর মানুষের তো অভিযোগের শেষ থাকে না। সমস্ত জট কাটিয়ে অবশেষে দিল্লীর বেস্ট কোম্পানি ন্যাকফ দায়িত্ব নিয়েছে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুর শহর দুর্গাপুর নোংরা আবর্জনা মুক্ত হবে।”
ইতিমধ্যেই, দিল্লীর একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে এ ব্যাপারে চুক্তি করেছে পুরসভা। জানা গেছে, পচনশীল জিনিস দিয়ে জৈব সার তৈরি করা হবে। দিল্লির ওই সংস্থাকে সরকারের তরফ থেকে প্রতি টন জৈব সার তৈরির জন্য ৪১৫টাকা করে দেওয়া হবে। পরে এই জৈব সার বাজারে বিক্রি করা হবে।
অন্যদিকে, অপচনশীল আবর্জনা থেকে তৈরি হবে এক প্রকার জ্বালানি তেল। সেই জ্বালানি তেল পৌছে যাবে সিমেন্ট তৈরির কারখানায়।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবর্জনার স্তুপের পাশেই এদিন বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্রের উদ্বোধন হলো। দিল্লির ‘ন্যাকফ’ নামে একটি সংস্থা এই বর্জ্য নিষ্কাশনের দায়িত্বে রয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজ। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ডিজেল চালিত যন্ত্রের মাধ্যমে বর্জ্য নিষ্কাশন হবে। ডিসেম্বর মাস থেকে বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া চলবে। আগামী ২০০ দিনের মধ্যে এই সমস্ত জমা আবর্জনা নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন ‘ন্যাকফ’ এর তরফে দীপক সিং সোলাঙ্কি।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে, পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি দু’টি করে বালতি দেওয়া হবে। নীল রঙের বালতিতে অপচনশীল (প্লাস্টিক, কাচ, কাগজ প্রভৃতি) আর সবুজ রঙের বালতিতে তরকারি বা ফলের খোসা-সহ অন্য পচনশীল জিনিস জমিয়ে রেখে, প্রতিদিন সকালে পুরসভার সাফাইকর্মীরা সেই আবর্জনা সংগ্রহ করবেন। তা নিয়ে আসা হবে প্ল্যান্টে। অপচশীল জিনিস ‘ট্রান্সফার স্টেশনে’ নিয়ে আসা হবে।
পচনশীল জিনিস নিয়ে আসা হবে ‘বায়ো-ম্যানিওর ইউনিটে’ (জৈব সার তৈরির ইউনিট)। সেখানে নির্দিষ্ট উচ্চতায় আবর্জনা স্তূপ রেখে তা ‘বায়ো ম্যানিওর’ যন্ত্রে ফেলা হবে। তাতে কাগজ, কাচ, প্লাস্টিকের মতো জিনিস আলাদা হয়ে যাবে। বাকি অংশ সারে পরিণত হবে।
এতে আরও সহজেই এই পুরো প্রক্রিয়াকরণ করা যাবে বলে দাবি করেছেন ওই সংস্থার এক আধিকারিক।