
৯৯ বাংলা নিউজ ডেস্ক : অনেকটা রাস্তা ধাওয়া করে পাকড়াও করা হয়েছিল দুই IS জঙ্গিকে। তাদের রাতভর জেরা করে মিলল চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। জঙ্গি-যোগ সন্দেহের পাশাপাশি রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপেরও অভিযোগে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ জানায়, হাওড়ার ওই দুই IS জঙ্গিদের মধ্যে একজন হাওড়া থানা এলাকার আফতাবউদ্দিন মুন্সি লেনের বাসিন্দা। এবং অন্যজন শিবপুরের গোলাম হোসেন লেনের বাসিন্দা। এরপরেই ওই দুই সন্দেহভাজন IS জঙ্গিকে জেরা করায় উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।যার চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কলকাতা পুলিশের কপালে।
STF সূত্রে জানা জানা গিয়েছে, কলকাতায় ধৃত দুই সন্দেহভাজন IS জঙ্গিকে জেরা করে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুই সন্দেহভাজন IS জঙ্গি জেরায় জানিয়েছে, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এম টেক ড্রপ আউট মহম্মদ সাদ্দাম। টেলিগ্রাম সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে সাঙ্কেতিক ভাষায় চলত তাঁদের কথাবার্তা। আর এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই দুই IS জঙ্গিকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ খিদিরপুর থেকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার রাতে কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল ধৃত ওই দুই যুবককে তাদের বাড়িতে নিয়ে এসে তল্লাশি চালায়। ভোর রাত পর্যন্ত চলে তল্লাশি। ল্যাপটপ, মোবাইল বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করে তারা। এদের কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। এছাড়াও বিএসএফ এর প্রাক্তন আইজি সমীর মিত্র বলেন, ‘কলকাতা জঙ্গিদের স্যাংচুয়ারি। এরা যার ধরা পড়ল, তারা হিমবাহের চূড়া। আমাদের যতটা সতর্ক হওয়া দরকার, আল কায়দা, আইসিস-এর প্রতি যতটা সতর্ক থাকা দরকার, ততটা আমরা নই। পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ, অস্ত্র জোগাড়, আত্মঘাতী আক্রমণের ছক ছিল। যে সাঙ্কেতিক ভাষায় যোগাযোগ করা হচ্ছিল, সেটা ডি-কোড করা দরকার। এটাও দেখতে হবে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কিনা।’
অন্যদিকে, ধৃত যুবক আফতাবুদ্দিন মুন্সি লেনের বাসিন্দা। এপ্রসঙ্গে পরিবারের লোকজন কোনও কথা বলতে চায়নি। প্রতিবেশীরা নাম বলতে পারছেন না। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, টিকিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ধৃত যুবকের বাবা অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী। এই ঘটনায় রীতিমত হতবাক অভিযুক্ত যুবকের এলাকায় বাসিন্দারা। এক প্রতিবেশী রোশন আলি জানালেন, শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে নিয়ে যায়। গত প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এলাকায় ৫ তলা আবাসনের ৩ তলার ফ্ল্যাটে থাকত ধৃত। এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ধৃত বছর ত্রিশের ওই যুবক। সে IS জঙ্গিকেসন্দেহে গ্রেফতার হতে পারে তা ভাবতেই পারছেন না এলাকার বাসিন্দারাও।
এই প্রসঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। জঙ্গি সন্দেহে ২ জন গ্রেফতারের পরে শাসক দলকেই নিশানা করেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলা জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়। বিনাযুদ্ধে ভারত দখলের চক্রান্ত চলেছে। অনুপ্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গি আনা, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা আনা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে।’
যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের তরফে দাবি, জঙ্গি ধরা পড়েছে এটাই কৃতিত্বের।